Thursday, November 21, 2024
Bengali Midnight Stories

বিকৃত যৌনতা – দামড়ু লুল্লা – দ্বিতীয় পর্ব

সকাল দশটা নাগাত স্টেশনে এসে পৌছালাম। ওদের থেকে বিদায় নিয়ে আমি নেমে গেলাম। স্টেশন থেকে বেড়িয়ে রিক্সার জন্য ওয়েট করছিলাম। আগের রাতে বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় রাস্তা ভেজা, যত্রতত্র জমা জল। অনেক্ষন রিক্সা না পেয়ে আমি হাঁটতে শুরু করেছিলাম।

সুব্রতর পৈত্রিক বাড়ী বীরভূম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে। এখন সে বাড়ী দেখাশোনা করবার জন্য সুব্রত ছাড়া কোনো বংশধর নেই। একজন বৃদ্ধ পাহারাদার তার দেখাশোনা করে। সুব্রতর সাথে এতবছরের সংসার জীবনে আমি মাত্র দুইবার গিয়েছি। সুব্রত চাইছিল আমি কিছুদিন ঐখানে ছুটি কাটিয়ে আসি। সুব্রতর সাতপুরুষের ওই বাড়ী। সে চায়নি বিক্রি করে দিতে। বেশ পুরোনো বাড়ী আর বিরাট জায়গা এখন ঝোপঝাড়ে ভর্তি জঙ্গল।

আমার ওই পুরোনো বাড়ী আর তার প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশ মনে ধরেছিল। ভাবলাম এবার সুব্রত কোরিয়া থেকে না ফেরা পর্যন্ত অন্তত ছুটিতো কাটানো যাবে। অজয় নদের ধারে শখ করে এই বাড়ী বানিয়েছিলেন সুব্রতর প্রপিতামহ। আমি যখন এসে পৌঁছলাম তখন সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে। চারপাশে বড় প্রাচীর দেওয়া। সেই প্রাচীর এখনও শক্তপোক্ত। তিনতলা বাড়িটা দৈত্যের মত দাঁড়িয়ে আছে অন্ধকারে।

চারপাশ আম, নারকেল,অশ্বথ,শিরীষ গাছগুলো ঘিরে আছে। বাড়ীর পেছনের দিকটা এখন আর কেউ যায় না। ওখানে একটা পুকুর আছে। আমি সুব্রতর মুখে শুনেছি ছোটবেলায় দেশবাড়িতে এলে নাকি ওই পুকুরে দাদুর সাথে জাল ফেলে মাছ ধরতো। এখন সেই পুকুর পরিত্যাক্ত। আমার এমন একটা গ্রাম্য পরিবেশে নিরালায় থাকা সেকেলে বাড়ী বেশ পছন্দের। শেষবার যখন এসেছিলাম মাত্র একটা দিন কাটিয়েই আমরা শান্তিনিকেতন চলে গেছিলাম।

বড় গেটের কাছে এসে আমি ডাক দেই – রামু কাকা?
একটা রোগাটে লিকলিকে চেহারার বৃদ্ধ বেরিয়ে এসে বলে – মালকিন?
আমি বলি হ্যা। রামু তড়িঘড়ি চাবি দিয়ে তালাটা খুলে ফেলে।

রামু এই বাড়ীর পাহারাদার। একসময় তাগড়া চেহারা ছিল। সুব্রতর ঠাকুরদা এই লোকটিকে বিহার থেকে আনে। সুব্রতর ছোটবেলা এই লোকটির সাথে কেটেছে। অজয় নদে নৌকায় চেপে মাছ ধরতে যাওয়া, গ্রামের বিলে পদ্ম ফুল দেখতে নিয়ে যাওয়া, গাজনের মেলা এসব আবদার রামুই মেটাত।

আমি বললাম কেমন আছেন? বলেই পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করলাম।
রামুর পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম এ বংশে কেউ কখনো করেনি। কিন্তু আমার কাছে বড়জনের প্রতি শ্রদ্ধা একটা সংস্কৃতি। বিশেষ করে যে লোকের কোলে পিঠে আমার স্বামী মানুষ হয়েছে।

রামু আমার পেছন দিকে তাকিয়ে বলে – ছোটবাবু আসেনি?
আমি বলি – না ও খুব ব্যস্ত কাকা। বিজনেসের কাজে দেশের বাইরে গেছে। তাই আমি একা ঘুরতে এসেছি।

এইবাড়ীতে সব মিলিয়ে বারোটা ঘর। তার মধ্যে তিনটি ঘর ও একটি রান্নার ঘর গোছানো। বাকিগুলো পরিত্যাক্ত। দূরেই প্রাচীরের গায়ে একটা টালির চালওয়ালা দুকামরার ঘর। যেখানে রামু থাকে। রামু বলে – মালকিন আপনি বিশ্রাম নেন।আমি হাবুর দোকান থেকে আপনার লিয়ে খাবার লিয়াসি।

সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত বাড়ছে। আমার ঘরে হ্যারিকেন জ্বলছে। আমার মনে হচ্ছে আমি যেন চেনা জগতের বাইরে কোথাও। ঝিঁঝিঁ পোকার অনবরত ডাক ছাড়া সম্পুর্ন নিস্তব্ধ রাত্রি। এই ঘরের মধ্যে একটা পুরোনো দিনের মেহগিনী কাঠের পালঙ্ক। একটা পুরোনো আলমারী। এর মধ্যে কি আছে আমার জানা নেই। সেবার সুব্রতও বলতে পারেনি। লেপ তোষকের উপর একটা নতুন বেডশিট পেতে দিয়ে গেছে রামু।। বড় জানলা দিয়ে বাড়ীর পেছন দিকটা দেখা যায়। এখন কেবল অন্ধকার। একটা জোনাকি এসে ঢুকে পড়ে।

আমি হ্যারিকেনটা হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসি। সিঁড়িটা বেশ খাড়া। ছাদে উঠতেই হালকা চাঁদের আলোয় দূরে নদীর রেখাটা বুঝতে পারা যায়। আমি ঠিক করি কালকে পারলে একবার নদীর দিকটা যাবো।

পরক্ষনেই আমি ভাবি এতো নদী নয় নদ। অজয় নদ যেন কোনো পুরুষের বেশে আমাকে হাতছানি দিচ্ছে। আমার কাছে পুরুষ কথাটি আসতেই সুব্রতর কথা মনে হল। আজ সেই যে সকালে কথা হয়েছিলো, তারপর আর হয়নি। ২ দিন হলো সুব্রত আদর পাইনি, কিছুদিন পাবোও না। গতরাতের ট্রেনের কামড়ার ভিতরের ঘটনা মনে পরে গেলো। নাসিরুদ্দিনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর থেকে আমার মধ্যে সমাজের নীচু শ্রেণীর মানুষদের প্রতি যে যৌন আকৃষ্টতা তৈরী হয়েছে তাতে আমার একজন নোংরা, অমার্জিত জঘন্য মানুষের প্রতিই ফ্যান্টাসি তৈরী হচ্ছিলো।

ছাদের উপর দিয়ে একটা পেঁচা উড়ে যাওয়ায় আমার ভাবনায় ছেদ পড়লো। আমি নীচে নেমে শাড়িটা বদলে একটা নাইটি পরে নিলাম। হ্যারিকেনের বাতিটা কমিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আমার ভোরে ওঠার অভ্যেস। সুব্রতর আদর খেয়েই প্রতি সকালে ঘুম ভাঙ্গে। উঠেই সুব্রতর জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়ে স্নান সেরে পুজো দিয়ে যোগাসন সেরে ছাত্রদের পড়ানো আমার নিত্যদিনের কাজ। এরকম আমি গত দুবছর করে আসছি। আজ ঘুমটা ভাঙলো আটটা নাগাদ সুব্রতর ফোনে। সুব্রত বলল – কি হল অর্চি আজ এত দেরী করলে ঘুম থেকে উঠতে?

আমি বললাম – আসলে তোমাদের এই বাড়িটা ভীষন ভালো লেগেছে। আর আনকোরা জায়গায় একটু ঘুম ভাঙলো দেরী করে।
সুব্রত বলল – তুমি পারলে আজ অজয় নদের কাছ থেকে ঘুরে আসতে পারো। সামনেই গ্রামের বটতলা মোড় পড়বে। ওখান থেকে রিক্সা নিতে পারো। কিংবা হেঁটেও যাওয়া যায়।

আমি ঠিক এটাই ভাবছিলাম একবার আমারও খুব ইচ্ছে অজয়ের পাড় থেকে ঘুরে আসবো।
আমি বললাম – রামুকাকা বলছিল এখানে নাকি পৌষ মাসে বাউল মেলা হয়? তুমি কখনো বলোনি তো? পরের বারে কিন্তু আমি তুমি একসাথে আসবো।
সুব্রত বলল – অর্চি রামুকাকা মুর্খসুর্খ মানুষ হতে পারেন। তিনি কিন্তু এই গ্রাম সম্পর্কে অনেক তথ্য রাখেন। আর গল্প করে তোমার সময়টাও কেটে যাবে।

আমি ফোনটা রেখে বিছানা থেকে উঠে পড়ি। ঘরের দরজাটা খুলে ফেলতেই চমকে ওঠে। সামনে এক আশ্চর্য্য মুর্তি – এলোমেলো পদক্ষেপ জিভ ঝুলছে মুখ দিয়ে, লালা গড়াচ্ছে একটা এবনর্মাল লোক। তার পরনে একটা ময়লা ইলাস্টিক বিহীন হাফপ্যান্ট। কোমরের ঘুমসিতে প্যান্টটা আটকানো। গায়ের রং ময়লা। তবে গায়ে গতরে স্বাস্থ্যবান। নেড়া মাথায় অতন্ত্য ছোট ছোট চুল। কাধের উপর মাথা টলছে
সে শব্দ করছে – অ্যা–ও–আ.. ল্যাল ..লা..লা।
রামুকাকা এসে পৌঁছে ধমক দিয়ে বলে – দামরু ভাগ ইহাসে।
আমি বললাম – এ কে কাকা?
– মালকিন এহি আমার একমাত্র বেটা আছে। লুল্লা ছেলেটাকে লিয়ে আর পারি না।
আমি বললাম – ঠিক আছে কাকা ওকে বকছেন কেন?
রামু এবার দামরুর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বলে বকবনি? কাল রাতে জাহান্নামে ছিল। বুড়া বাপ যদ্দিন তদ্দিন, তারপর তো নসিবে দুঃখ আছে। কে খিলাবে, পরাবে?

রামুকাকার আসল নাম রামলাল সাউ। রামলালের এই একটি ছেলে আজন্ম ল্যাংড়ালুল্লা। এই এবনর্মাল ছেলেটিকে নিয়ে রামুর খুব দুশ্চিন্তা হয়। রামুর বউ হতভাগ্য ছেলেটিকে আদরে মানুষ করেছে। বউএর মৃত্যুর পর বিহার থেকে রামু দামরুকে নিয়ে চলে আসে।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, তা তুমি একা ওর দেখাশুনা করতে পারো?
রামু বললো – না মালকিন। বাড়ীর পাশেই ঝুমরি আর লতিফ থাকে। ওরা দুজনে আমাকে সাহায্য করে। কালরাতে তোমার কথা শুনে ঝুমরি দেখা করতে এসেছিলো। রাত হয়ে গেছে তাই আর ডাকিনি তোমাকে। দাড়াও ওকে ডেকে দেই, তোমার সাথে কথা বললে তোমার সময় কাটবে। ওই আমার লুল্লাটাকে দেখেশুনে রাখে।

রামু কাকা ঝুমরিকে ডেকে আনলো। ২০–২২ বয়স হবে। খুবই চটপটে ভাব। ওর সাথে কথা বলতে লাগলাম। আমার সাথে অনেক ফ্রি হয়ে গেলো। আমি বললাম আমাকে দিদি ডাকতে। ওর স্বামী লতিফ ইটভাটায় কাজ করে। দেখে বুঝা গেলো যে দামরুর সাথে ওর খুব সখ্যতা। ঝুমরি কে দেখলেই দামরু ওর দিকে ছুটে যায়। তা দুপুরে ঝুমরি রান্না করলো। দুপুরের রান্না সেরে উঠলেই রামলাল ওকে ডাক দেয় দামরুটাকে একটু নেহেলা দে। আমি অবাক হই একি বলছে রামুকাকা? ঝুমরিকে দিয়ে তার ধাড়ি জওয়ান ছেলেটাকে স্নান করিয়ে দিতে বলছে!

আমি চুপ রইলাম। ঝুমরি বলে ঠিক আছে কাকা। বৌদি তুমি বসো আমি ওকে নেহেলায় দিয়ে আসি। ওকে আমিই সবসময় নেহেলা দেই এখানে আসার পর থেকে।

রামলাল একটা তেলের শিশি বাড়িয়ে দিয়ে চলে যায়। দামরুকে নিয়ে ঝুমরি বাথরুমে যায়। অনেকক্ষণ পর ওরা বের হলো। আমি লক্ষ্য করলাম দামরুকে পরিচ্ছন্ন জামাকাপড়ে বেশ লাগছে। কেউ লুল্লা বলবে না কিন্তু ঝুমরির ব্লাউজের সামনের দিকটা ভিজে চিপকে আছে এবং শাড়ির তলার দিকটা ভিজে গেছে।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, কিরে তোর এই অবস্থা হলো কেনো?
তখন ঝুমরি বলে, আর বলো না দিদি। বাচ্চাদের মতো জল ছিটাতে থাকে তো তাই। এই বলে কেটে ওর বাড়ি চলে গেলো।

Back To Top